একজন শিক্ষার্থীও হাতে পায়নি ইউনিক আইডি, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ


প্রকাশের সময় : অগাস্ট ১১, ২০২২, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন / ১৩২
একজন শিক্ষার্থীও হাতে পায়নি ইউনিক আইডি, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ

একজন শিক্ষার্থীও পায়নি ইউনিক আইডি। অথচ চার বছরের প্রকল্পের মেয়াদ ফুরিয়েছে।  মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ১ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থীকে ‘ইউনিক আইডি’ দেওয়ার জন্য প্রকল্প করা হয়েছিলো। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় সব শিক্ষার্থীর ডেটা এন্ট্রির কাজও শেষ হয়নি। এ ছাড়া শিক্ষাতথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রণয়নের কাজেও তেমন অগ্রগতি হয়নি।

ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর জন্য একটি ইউনিক আইডি তৈরি এবং সমন্বিত শিক্ষাতথ্য ব্যবস্থাপনাপদ্ধতি প্রণয়ন করতে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে এই প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ব্যয় ধরা হয় ৩৫৩ কোটি ২১ লাখ ৪২ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে আছে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস)। প্রকল্পের চার বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন।

এ অবস্থায় প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর তোড়জোড় চলছে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়বে না।

সাবেক শিক্ষাসচিব মো. নজরুল ইসলাম খানের উদ্যোগ এটি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মৌলিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য এক জায়গায় রাখার উদ্দেশ্যেই তৈরি করার কথা ইউনিক আইডি। পুরো শিক্ষাজীবনে কোথায় কি পড়েছে, কি ফল করেছে সব এক ক্লিকে পাওয়া যাবে। পাবলিক পরীক্ষা ও ভর্তিপরীক্ষাবিহীন ভর্তিতেও এই আইড কাজে লাগানোর লক্ষ্য ছিলো। পরে যুক্ত হয় শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে এ আইডিই জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) রূপান্তরিত করার উদ্যোগ। তবে ব্যানবেইসে কর্মরত বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের অদক্ষতায় ও গাফিলতিতে প্রকল্পের এই অবস্থা বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের মতে,  মাঠ সম্পর্কে তাদের কোনো ধারনা ছিলো না। যথারীতি অন্য সংস্থাগুলোকে দোষারোপ করছেন এই কর্মকর্তারা।

অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট সূত্র জানায়, ব্যানবেইসে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই ব্যস্ত বেসরকারি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পাইয়ে দেয়ার দালালিতে। 

ব্যানবেইসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইতিমধ্যে ৭৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর তথ্য সফটওয়্যারে সংযুক্ত করা হয়েছে। কিছুদিন আগে ৫০০ জন শিক্ষার্থীর তথ্য ইউনিক আইডি তৈরির মূল সফটওয়্যার পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষামূলক ইউনিক আইডি তৈরি হয়েছে মাত্র ২৭২টি।

প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক মো. শামছুল আলম বলেন, পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষার্থীরই ইউনিক আইডি তৈরি হবে। কিছু সমস্যার কারণে দেরি হয়েছে।’

নির্ধারিত সময়ে কেন শিক্ষার্থীরা ইউনিক আইডি পায়নি, জানতে চাইলে শামছুল আলম বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া সফটওয়্যারে এন্ট্রি দেওয়া তথ্যগুলো থেকে ইউনিক আইডি তৈরির দায়িত্বে থাকা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়েরও কিছু সমস্যা ছিল।