জার্মানিতে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স আবেদনের পরিপূর্ণ গাইডলাইন


প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৫, ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন / ২৭৪
জার্মানিতে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স আবেদনের পরিপূর্ণ গাইডলাইন

জার্মানিতে ব্যাচেলর ও মাস্টার্স সম্পর্কিত সম্পূর্ণ গাইডলাইন

বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানি। সুন্দর সাজানো গোছানো পরিপাটি ইউরোপীয় এই সুন্দর দেশটিতে রয়েছে কোনরকম টিউশন ফি ছাড়াই পৃথিবীর প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার সুযোগ। ১০ ধাপের এই লেখাটিতে রয়েছে তার পরিপূর্ণ গাইডলাইন।

ধাপঃ১
কোর্স/সাবজেক্ট খুঁজে বের করা:
আপনি ব্যাচেলর কিংবা মাস্টার্স হন, ইঞ্জিনিয়ারিং বা ডাক্তার হন, আপনার যে সাবজেক্টই হোক না কেন, জার্মানিতে প্রায় সব ধরনের সাবজেক্ট আছে। শুধুমাত্র আপনার খুঁজে বের করতে হবে। আপনি কোন সাবজেক্টে আবেদন করবেন, আপনার পছন্দ, অপছন্দ, সাবজেক্টের সাথে মিলে কি না, তা আল্লাহর রাস্তে নিজে খুঁজে বের করুন।

গুগলে গিয়ে লিখেন, DAAD De/International Program…

কোর্সের আবেদনের যোগ্যতা কি লাগবে, রিকয়ারমেন্ট কি, খুঁটিনাটি যা আছে খুবই ভাল করে পড়ে ফেলুন।


কোর্স খোজা হলে, Exel/MS Word ফাইলে, কোর্সের নাম, ডেডলাইন কবে, IELTS কত লাগে, কোর্সের আবেদন কবে, এমন একটা লিস্ট করেন, এই লিস্ট খুবই কাজে আসবে।

ধাপ: ২
কি কি পেপারস লাগবেঃ
বাবারে বাবা! কোর্স খুঁজে বহুত হয়রান হয়ে গেছেন।
সাবাস, আপনাকে দিয়েই হবে। তো এবার কাগজপত্র রেডি করার পালা। আসেন খেলা শুরু করেন।
ব্যাচেলর:-
১. S.S.C সার্টিফিকেট + ট্রান্সক্রিপ্ট
২. H.S.C সার্টিফিকেট + ট্রান্সক্রিপ্ট
৩.১ বছরের ট্রান্সক্রিপ্ট
৪.মিনিমাম পাসিং গ্রেড (ট্রান্সক্রপ্টের যদি গ্রেডিং সিস্টেম দেয়া থাকে তবে লাগবে না)
৫.IELTS
৬.Europass সিভি
৭.পাসপোর্ট
৮.মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন (মেন্ডাটরী না)
৯.মোটিভেশনাল লেটার (যদি ইউনিভার্সিটি চায়)
১০.এক্সট্রা কারিকুলাম এক্টিভিটি (যদি থাকে)

মাস্টার্সঃ-
১. HSC/ Diploma Certificate
২. HSC/Diploma Transcript( ডিপ্লোমা ট্রান্সক্রিপ্ট ১থেকে ৮ টা সবগুলা)
৩. B.Sc /BBA/BA honors Certificate
৪. B.Sc /BBA/BA honors Transcript
৫. IELTS Certificate
৬. Passport
৭. Recommendation Letter From Professor (২ টা ২ জন থেকে নিবেন। কিছু ভার্সিটি চায়, কিছু চায় না, তবুও নিয়ে রাখুন। এসিসটেন্ট, এসোসিয়েট, যে কোন প্রফেসর হলেই হল। ধরা বাঁধা কোন নিয়ম নাই।)
৮. Recommendation Letter From Office Head ( আপনার যদি Works Experience থাকে, তাহলে নিবেন, না নিলেও সমস্যা নাই। চেয়ারম্যান, CEO, Director/Admin যে কোন এক জন থেকে নিলেই হল।)
৯. Works Experience Certificate (যদি থাকে, না থাকলেও সমস্যা নাই)
১০. Europass CV ( কিভাবে বানাবেন গুগল করেন, ইউটুব সার্চ করেন)
১১. Letter of Motivation (কিভাবে লিখবেন গুগল করেন, ইউটুব সার্চ করেন)
১২. Medium of Instructions (MOI) (আপনার IELTS 6.5 এর কম থাকলে তুলতে পারেন। 6.5 থাকলে আর এটার দরকার নাই।)
১৩. Skill Training Course Certificate (Auto Cad, MS office, etc. if any)
১৪. মিনিমাম পাসিং গ্রেড (ট্রান্সক্রপ্টের যদি গ্রেডিং সিস্টেম দেয়া থাকে তবে লাগবে না)

ধাপঃ৩
কাগজপত্র নোটারী করা:
ভাইরে ভাই, এইগুলা কালেক্ট করতে একদম হালুয়া টাইট হয়ে গেছে জানি।
এই কাগজপত্র গুলো আপনার হাতে থাকা মানে, আপনার জার্মানিতে যাওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার InShaAllha
তো কাগজ গুলো নোটারই করে ফেলেন।
ব্যাচেলরের জন্য:- ১-৮
মাস্টার্সের জন্য:- ১,২,৩,৪,৫,৬,১৩,১৪
সবগুলো অফসেট কাগজে সাদাকালো প্রিন্ট দিয়ে নোটারী করে ফেলেন।
মোহাম্মাদপুর, ফার্মগেট, উত্তরা, মিরপুর ১০, নীলক্ষেত সহ বাংলাদেশের সব কোর্ট/আদালত পাড়া থেকে উকিল দিয়ে করাতে পারবেন।
ঢাকার ভিতরে প্রতি-কপি সর্বোচ্চ ৮-১০ টাকা দিবেন। যদিও ১০০ টাকা চাইবে প্রথমে। আর ঢাকার বাইরে প্রতি-কপি সর্বোচ্চ ৩০-৫০ টাকার বেশী দিয়েন না।

ধাপঃ৪
বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনঃ
নোটারই করা শেষ। মহান কার্য সম্পাদন করে ফেলছেন, কংগ্রাচুলেশনস, আপনাকে দিয়েই হবে। সাবাস। তো আসেন এবার আবেদন শুরু করি।
এইডা আবার কেমনে করে?
কোর্স খুঁজে একটা লিস্ট বানিয়েছিলেন মনে আছে?
ঐটা সামনে নিয়ে বসেন। যেটার ডেডলাইন সময়ে কম, সেটা আগে আবেদন করবেন।
সোজা ঐটা সাবজেক্টের ওয়েব সাইটে চলে যান,
দেখেন কি ইন্সট্রাকশন দেয়া আছে। খুব ভালমতো ইন্সট্রাকশন পড়েন। দরকার পড়লে ১০ বার পড়েন। তারপরও কোন কিছু ভুল করা যাবে না।
ঐ অনুযায়ী আবেদন করা আরম্ভ করেন।
এক এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন পদ্ধতি এক এক রকম, তবে জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়তে সাধারণত ৩ ভাবে আবেদন করা যায়:
১. সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটের অনলাইনে। সেখানে তাদের অনলাইনে আবেদন করে। আপনার সব সার্টিফিকেটর স্কানকপি আপলোড করলেই হয়ে যাবে। কোন টাকাপয়সা লাগবে না। আপনি চান্স পেলে অফার-লেটার আপনার মেইলে পাঠিয়ে দিবে। ঘটনা ফিনিশ।
২. সরাসরি ওয়েব সাইটে আবেদন করে, ঐ আবেদন পত্র প্রিন্ট করে এবং আপনার নোটারী করা পেপার সহ ১-১৩ নং ভার্সিটিতে DHL/FedEx এর মাধ্যমে পাঠাতে হবে। খরচ হবে ১৬০০/- টাকা।
দেশ কুরিয়ারে সবচেয়ে সবচেয়ে কম টাকা লাগে।
৩. Uni-Assist এর মাধ্যমে। Uni-Assist হচ্ছে একটা জার্মানির এডমিশন সহায়ক সংস্থা, যারা আপনাকে ভর্তিতে সহযোগী হিসেবে কাজ করে।
Uni-Assist এর ওয়েব সাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
ঐ আবেদন পত্র এবং আপনার নোটারী করা সব সার্টিফিকেট
সবগুলোর ১ সেট Uni-Assist এর ঠিকানায় DHL/FedEx দিয়ে পাঠাতে হবে। Uni-Assist কি, কেন, কিভাবে এটা সম্পর্কে ইউটুবে অনেক বাংলা ভিডিও+গাইড লাইন আছে। সবগুলো দেখে নিন। কনসেপ্ট ক্লিয়ার হয়ে যাবে। Uni-Assist এ আবেদন করতে প্রথম সাবজেক্ট ৭৫ ইউরো এবং পরবর্তী সাবজেক্টের চার্জ ৩০ ইউরো। আপনি এরকম করে যতগুলো খুশি ততগুলো আবেদন করতে পারবেন।

চিপা-বুদ্ধি হলো, যে সব কোর্স Uni-Assist এ আবেদন করতে হয়, ঐগুলা কম আবেদন করবেন। চেষ্টা করবেন, সরাসরি আবেদন করা যায় এমন কোর্সে আবেদন করতে এতে আপনার খরচ তত কমবে। আমি নিজেই যে ভার্সিটিতে পড়ি সেটা ভার্সিটিতে সরাসরিভাবে আবেদন করতে হয়। আমার সবমিলিয়ে খরচ গেছিলো ১৭ শ টাকা মাত্র।
আর অন্যতম সেরা টিপস হলো,
কিছু ভার্সিটিতে দেখবেন কিছু কোর্স থাকে,
রেসট্রিকটেড, অর্থাৎ আসন সংখ্যা সীমিত। তারমানে সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের সামনের সিরিয়ালে যারা তাদেরকেই নিবে। আর কিছু ভার্সিটিতে আছে, ননরেসট্রিকটেড প্রোগ্রাম। অর্থাৎ, আপনি যদি তাদের ওয়েব সাইটে উল্লেখিত আবেদন করার যোগ্যতা পূরন করলেই আপনাকে অফার-লেটার দিবে। কোন ধরি বাঁধা সিটের লিমিট নাই। তাই চেষ্টা করুন, ওয়েব সাইট ঘেঁটে যেটায় আবেদন করছেন, সেটা রেসট্রিকটেড নাকি নন রেসট্রিকটেড।
আবেদন করবেন।

ধাপঃ৫
Accommodation খোজা:
জার্মানিতে অফারলেটার পাওয়া থেকে ভার্সিটির স্টুডেন্ট ডর্মে রুম পাওয়া কঠিন । আপনি জার্মানিতে সফল ভাবে আবেদন করেছেন, তারমানে মোটামুটিভাবে নিশ্চিত থাকুন, আপনি অফার-লেটার পাবেন। অফার-লেটার পেলে, সব পেপারস থাকলে ইনশাল্লাহ এটা নিশ্চিত থাকুন, আপনি জার্মানিতেও আসবেন। সুতরাং যতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করবেন, ঠিক ততগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে আবেদন করে রাখুন। ডর্মে আবেদন করতে কোন বাঁধা নাই। এত করে আপনার জার্মানিতে এসেই ধাক্কা খেতে হবে না। প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ে studierendenwerk আছে, যেটা সিটিতে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় studierendenwerk+ঐ সিটির নাম লিখে গুগল করেন। পেয়ে যাবেন। মাত্র কয়েক-মিনিট লাগে আবেদন করতে।

ধাপঃ৬
জার্মান এম্বাসী এপায়নমেন্টঃ
বর্তমান পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহরকমের খারাপ, সবাই জানেন, আপনি আজই যদি এপায়নমেন্ট নেন, তবে ইন্টার্ভিউ ডেট পেতে ১০-১২ মাস লাগবে। সেই হিসাব করে রেজিষ্টেশন করে রাখুন।
মোটামুটিভাবে আপনি যদি ইউন্টারে সেশনে জার্মানিতে আসতে চান, তবে আপনার (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) এখনই এপায়নমেন্টের রেজিষ্টেশন করে রাখা উচিত। তাহলে হয়তো অক্টোবর-নভেম্বরে ভিসা ইন্টার্ভিউ দিতে পারবেন। নাহলে অফার লেটার পেয়ে দেশে বসে থাকতে হবে চরম অনিশ্চয়তায়।
সুতরাং বিষয়টা ভেবে দেখুন।

ধাপঃ৭
অফারলেটার:
অনেক কষ্ট করে তো আবেদন করছেন।
এবার আবেদন করার ২ মাস পরে দেখবেন কোন এক সন্ধায় আপনার অফারলেটার চলে আসছে। কংগ্রাচুলেশন। যদিও রিজেকশন লেটার পেলেও মন খারাপ করার কিছুই নাই। আমি প্রথমবার ৫ টায় আবেদন কারছিলাম। আমার ৩ টায় অফারলেটার আর ২ টায় রিজেকশন আসছিলো।
চেষ্টা করবেন কমপক্ষে ১০ টা ভার্সিটিতে আবেদন করার।
যে কোন একটা অফারলেটার পাওয়া মানে আপনার জার্মানীতে ৯০% যাওয়া কমফার্ম।

ধাপঃ৮
ব্লক একাউন্ট:
ব্লক একাউন্ট কি মোটামুটি সবাই জানেন, তারপরও বলি,
জার্মানিতে আপনার নিজের নামে ১০৫৩২ ইউরো ১ বছরের জন্য জমা করতে হয়। জার্মানিতে যাওয়ার পরে আপনি পুরো টাকাটা ১২ কিস্তিতে ফেরত পাবেন।
অন্যান্য দেশের দেশে যেমন ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হয়, জার্মানিতে ব্যাংক স্টেটমেন্টের পরিবর্তে ব্লক একাউন্ট করতে হয়। ব্লক একাউন্ট সোনালী, সিটি, ইস্টার্ন, এছাড়া অন্যান্য ব্যাংকে করতে পারবেন।
ব্লক একাউন্ট কি, কেন? কিভাবে করবেন,
এর বিস্তারিত ইউটিউবে দেখতে পারেন।

ধাপঃ৯
ডকুমেন্ট রেডি করা:
এম্বাসী থেকে ইন্টার্ভিউ ডেট দেয়ার আগে, আপনার সব ডকুমেন্টের সফট-কপি চেয়ে, এম্বাসী মেইল করবে। ৭ দিনের মধ্যে (৭x২৪) আপনাকে ঐ মেইলের রিপ্লাই হিসেবে আপনার সব ডকুমেন্ট সাব-মিশন করতে হবে। টিপস হলো, আপনার আগের সিরিয়ালে যারা ডক সাব-মিশন মেইল পাচ্ছে, তখনই আপনার ব্লক একাউন্ট সহ যত পেপার দরকার, সবগুলো পেপার রেডি করে রাখুন, যাতে মেইল আসার সাথে-সাথে আপনি মেইলের রিপ্লে দিতে পারেন। আপনার কি কি ডকুমেন্ট দেয়া লাগবে, তা মেইলেই উল্লেখ করা থাকবে।
এম্বাসীতে যে সব পেপারস সাব-মিশন করতে হয়, তার লিস্ট হলোঃ
১। Enrolment Certificate (If eligible for you & not older than 10 days)
২। 3 Recent Biometrical Passport Photographs
আপনার ৩ টি ছবি একটি একটা ১ পেইজে নিয়ে পিডিএফ করবেন।
৩। Filled and Signed Visa Application Form
৪। Passport Data Page
৫। Offer Letter
৬। HSC Certificate, Mark-sheets
৭। BSc/BBA/BA hons Certificate+Mark-sheets
৮। IELTS
৯। Blocking Confirmation
১০। 6 Months Travel Insurance (Incoming Health Insuarance+Travel Insurance)
১১। Motivation Letter
১২। জব এক্সপ্রিয়েন্স (যদি থাকে)
১৩। Declaration of Consent Data
সবগুলো ফাইলকে একটা পিডিএফ ফাইলে কম্বাইন্ড করে, সেটা ১০ মেগাবাইটে কনভার্ট করে মেইল করবেন।
ডকুমেন্ট সাবমিট হলে, ভাগ্য ভাল থাকলে ঐ দিনই আপনাকে ই-মেইল অথবা ফোনে জানিয়ে দিবে, কবে, কখন আপনার ইন্টার্ভিউ।

ধাপঃ১০
ভিসা ইনটারভিউঃ
আপনি যে সব ডকুমেন্ট মেইল করেছিলেন, ঐ সকল ডকুমেন্টের ২ সেট সাদাকালো ভাল মানের অফসেটে কাগজে প্রিন্ট করে এবং সকল অরিজিনাল সার্টিফিকেট সাথে নিয়ে যাবেন নিয়ে যাবেন।
কি কি প্রিন্ট করে নিবেন, তার লিস্ট আবার দিচ্ছি: ( সব গুলা ২ সেট ফটোকপি, ১ সেট অরিজিনাল)
১। Enrolment Certificate (If elegible for you & not older than 10 days)
২। Recent Biometrical Passport Photographs
আপনার ৩ টি ছবি একটি একটা ১ পেইজে নিয়ে পিডিএফ করবেন।
৩। Filled and Signed Visa Application Form
৪। Passport Data Page
৫। Offer Letter
৬। HSC Certificate, Mark-sheets
৭। BSc/BBA/BA hons. Certificate +Mark-sheets
৮। IELTS
৯। Blocking Confirmation
১০। 6 Months Travel Insurance (Incoming Health Insurance +Travel Insurance)
১১। Motivation Letter
১২। জব এক্সপ্রিয়েন্স (যদি থাকে)
১৩। Declaration of Consent Data (জার্মান এম্বাসীর ওয়েব সাইটে আছে, গুগল করলেই পাবেন, ঐটা প্রিন্ট করে পূরন করে নিয়ে যাবেন)
১৩। ভিসা ফি ৭৫ ইউরো (টাকায় কনভার্ট করে যত আসে, ভাংতি করে নিয়ে যাবেন। কমবেশি ২-১ শ টাকা নিয়ে যাবেন।)
ভিসা ইন্টার্ভিউ এর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে যাবেন। যে মেইলে আপনার ভিসা ইন্টার্ভিউয়ের ডেট উল্লেখ আছে, ঐটা প্রিন্ট করে নিয়ে যাবেন।
পারলে সাথে কেউকে নিন। ব্যাগ, ছাতা রাখার কোন জায়গা নাই।
ভিতরে মোবাইল, ওয়ালেট, চাবি, জমা দিতে পারবেন।
ভিতরে ইন্টার্ভিউ এর সময়ে শান্ত থাকুন। যা যা জানতে চাইবে স্বাভাবিক উত্তর দিন। যে যে পেপারস চাইবে, ভালমতো সিরিয়াল অনুযায়ী আগেই এম্বাসীর ওয়েব সাইটে দেয়া চেক-লিস্ট অনুযায়ী সাজিয়ে রাখুন। আপনার ভার্সিটির ওয়েব পোর্টাল থাকলে, তার ইউজার আইডি আর পাসওয়ার্ড একটা কাগজে আগে থেকে লিখে রাখুন। টোফেল আছে যাদের তাদের ক্ষেত্রেও তাই। বাংলায় প্রশ্ন করলে, বাংলায় জবাব দিন। ইংরেজি হলে ইংরেজিতে। নিজেকে এম্বাসীতে প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন। নাম, কোন বিশ্ববিদ্যালয়, কি সাবজেক্ট, কোন কোন কোর্স আছে, ভবিষ্যতে কি করবেন, ব্লকের টাকা কেমনে পেয়েছেন, পরিবার, পূর্ববর্তী পড়াশোনা, পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা, কোথায় থাকবেন জার্মানিতে গিয়ে, এই ধরনের প্রশ্ন করতে পারে। ভয় পাবার কোন কারণ নাই। সাথে অবশ্যই একটা কলম নিন। স্বাভাবিক পোশাক পরুন।
ভিসা অফিসারেরা অত্যন্ত ভাল। আপনাকে তারা ভিসা দিতেই বসে আছে। সুতরাং নিশ্চিন্তে থাকুন। আপনার সব পেপারস থাকলে তারা আপনাকে কখনই রিজেক্ট করবে না। ভিসা ইন্টার্ভিউ শেষ হলে মানসিক ভাবে জার্মানিতে আসার প্রিপারেশন শুরু করতে পারেন।

ধাপঃ১১ ভিসা প্রাপ্তি:
সাধারণত ২৫ দিনেই বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ভিসা দিয়ে দেয়। কমবেশি হতে পারে। অনেকেই ৫ দিনেও ভিসা পেতে দেখেছি। আমার ক্ষেত্রে ৬৭ দিন লেগেছিলো। কারণ, আমার ইন্টার্ভিউয়ের পরে লক ডাউনে এম্বাসী বন্ধ ছিলো। তাই দেরি হলেও ভয়ের কিছু নাই।
পাসপোর্ট কালেকশন মেইল পেলে, ভিসা ইন্টার্ভিউ এর সময়ে যে কাগজ দিয়েছিলো ঐটা নিয়ে, সময়মতো সোনার হরিণ সংগ্রহ করে দ্রুতই চলে আসুন আপনার স্বপ্নের রাজ্য ডয়েচল্যান্ড।
আপনার জন্য অগণিত সম্ভাবনার দুয়ার খুলে আছে।
জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা, কঠিন কিছুই না, তবে প্রচণ্ড পরিমাণে ধৈর্যের ব্যাপার।
আপনাকে প্রতি পদে পদে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে। হাল ছাড়া যাবে না। পৃথিবীতে কোন কিছুই সহজ না। আমি জানি আপনি পারবেন, আরে আপনাকে দিয়েই হবে। জাস্ট লেগে থাকুন। ইনশাল্লাহ আপনার সাথে আমার ল্যান্ড অব অপারটুনিটি ডয়েচল্যান্ডে দেখা হচ্ছে। সকলের জন্য অনিন্দ্য শুভ কামনা। আমার জন্য দোয়া করবেন।
আসসালামু-আলাইকুম।
(বিঃদ্রঃ ওয়েবসাইট ঘেঁটে আমার তথ্যের ক্রস চেক করে নিবেন। পৃথিবীতে কোন মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।)

শুভেচ্ছান্তে
মোল্লা মোহাম্মাদ তমাল
এমএসসি (চলমান), ট্রপিকাল হাইড্রোলজি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং,
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব ডার্মস্টাড, ডার্মস্টাড, জার্মানি।