ফজলে রাব্বী মানু, ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ী গ্রামে যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ১০০ ফিট এলাকা নদী গর্ভে ধসে গেছে। যমুনা নদীর পানির স্রোতে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় এ ঘটনা ঘটে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ধুনট উপজেলায় প্রতি বছর যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি বা কমার সময়ে নদী তীরে ভাঙন দেখা দেয়। নদী ভাঙনের ফলে বসতভিটা, কৃষকের ফসলের ক্ষেত, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাট নদী গর্ভে বিলীন হয়। নদীর হাত থেকে ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়নের গ্রাম গুলো রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। ২০১১ সালে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বরইতলী গ্রাম থেকে ভূতবাড়ী গ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার নদীর তীর এলাকায় ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ করা হয়। ফলে কয়েক বছর ধরে নদীতে আর ভাঙন দেখা দেয়নি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে ভান্ডারবাড়ি গ্রামের চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ধস দেখা দেয়। মাত্র দু’ঘন্টায় তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের প্রায় ১০০ ফিট এলাকার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন জানান, নদীর ভাঙনরোধে তীর স্লোপিং করে তার উপর জিও চট বিছানো হয়। সেই জিও চটের উপর পাথর ও সিমেন্টের তৈরি সিসি ব্লক দিয়ে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ভাঙনরোধ প্রকল্পের কাজ করা হয়। বর্তমানে যমুনার পানি কমে যাওয়ায় নদীর বিভিন্নস্ঘতানে জেগে উঠেছে বালুচর। যার কারনে পানির স্রোত এসে ধসে যাওয়া স্থানে আঘাত করছিল। সেখানে পানি ঘূর্ণায়বর্তের সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তীর সংরক্ষণ এলাকার প্রায় ১০০ ফিট ধসে যায়। যার প্রস্থ্য প্রায় ৫০ ফিট। এছাড়াও ওই এলাকার আরও প্রায় ৫০০ ফিট দৈর্ঘ্য এলাকায় ধসের আশংকা রয়েছে। এদিকে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ধস দেখা দেওয়ায় তীরবর্তী এলাকায় নদী ভাঙনের আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।
ভান্ডারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুল করিম আপেল বলেন, যমুনা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনের জন্য বাল্কহেড এবং পরিবহনের জন্য অসংখ্য নৌকা নদী তীর দিয়ে যাওয়া আসা করে। এতে নদীর পানিতে বড় আকারের ঢেউ তৈরি হয়। যা নদী তীরে আঘাত হানছে। একারনেই ভান্ডারবাড়ীর চেয়ারম্যান বাড়ির সামনে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের বড় একটা অংশ ধসে গেছে। আরও ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির জানান, ভান্ডারবাড়ীতে তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ধসে যাওয়া স্থান পরিদর্শন করেছি। বর্তমানে পানি স্থির হওয়ায় ধসের আর কোন ঘটনা নেই। তবুও ধসে যাওয়া স্থান নজরদারীতে রাখা হয়েছে। এছাড়া ধস ঠেকাতে জরুরী ভিত্তিতে কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :