বশেমুরবিপ্রবি সংবাদদাতাঃ গত ২৮ শে নভেম্বর রাত ৮ টায় জুম মিটিং এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি) তে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন “টেডএক্স” এর একটি ভার্চুয়াল কনফারেন্স। টেড (TED-Technology, Entertainment, Design) একটি মিডিয়া সংস্থা যা বিনামূল্যে অনলাইনে বা আলোচনা পোস্ট করে। তাদের শ্লোগান হচ্ছে “Ideas worth spreading”। টেডেক্স হলো টেড এর একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান, যেটি কাজ করছে কোন একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটিতে টেড এর মিশনের চেতনা সম্প্রসারণের জন্য।
বশেমুরবিপ্রবি এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১৫০ জন অংশগ্রহণকারী এই ভার্চুয়াল কনফারেন্স – এ অংশগ্রহণ করেন। কনফারেন্স – এ আন্তর্জাতিক স্পিকার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মেগান ম্যাকআর্থার (যিনি পেশায় একজন নাসা নভোচারী), কেমি দা সিলভা-ইবরু (যিনি পেশায় একজন মহিলা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ), জয়াশ্রী মাথহা (যিনি একজন মহিলা সন্ন্যাসী), জামিলা গর্ডন (যিনি পেশায় একজন আর্টিফিশিয়াল ইনটিলিজেন্স অ্যাডভোকেট), ক্লুয়েন আদামেক(যিনি ফার্স্ট নেশনস ইউকন এর অ্যাসেম্বিলি এর আঞ্চলিক প্রধান), অ্যাঞ্জেলিক প্যারিসট-পটার ( যিনি একজন আইনী এবং ব্যবসায়িক অখণ্ডতার নেতা) এবং সোফি রোজ (যিনি একজন সংক্রামক রোগ গবেষক)। এসময় তারা তাদের এবারের ইভেন্ট সম্পর্কে বলেন, “২০২০ সালটি TEDxWomen নির্ভর, যা বিশ্বব্যাপী টেডউইমেনদের সক্রিয়করণ এর বার্তাটি প্রশস্ত ও স্থানীয়করণের জন্য ডিজাইন করা” এবং TEDxWomen এর এবারের থিম “Fearless” এর অর্থ “যেখানে একীভূত বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে মহিলাদের ট্রেলব্ল্যাজিংয়ের ধারণাগুলি প্রদর্শিত হবে” । এ সময় “Fearless” এর বর্ণনা দিতে গিয়ে অ্যাঞ্জেলিক প্যারিসট-পটার ( যিনি একজন আইনী এবং ব্যবসায়িক অখণ্ডতার নেতা) বলেন, “আমরা “নির্ভীক” কারণ আমরা যখন জিনিসগুলি পেয়েছি তার চেয়ে ভাল অবস্থা এবং জায়গায় জিনিস রেখে যাওয়ার পারস্পরিক ক্ষমতার বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি”। বর্তমান কোভিড-১৯ পরিবেশ এ নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে সংক্রামক রোগ গবেষক সোফি রোজ বলেন, “মহিলারাও অংশ নিচ্ছেন এবং COVID-19 এর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং মহামারী পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছেন। সুতরাং “নির্ভীক” হোন।” । ভালো থাকার জাদুকরী মন্ত্র শেখাতে গিয়ে মহিলা সন্ন্যাসী জয়াশ্রী মাথহা বলেন, “ “আপনাকে ধন্যবাদ”। আমাদের দিনে অন্তত ২ বার বলা উচিত যে আপনাকে ধন্যবাদ, একবার ঘুম থেকে ওঠার পরে এবং আরেকটি ঘুমানোর আগে। তাহলে আপনি যেকোন জীবনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে, আনন্দিত ও আনন্দের সাথে মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারেন”। সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল কনফারেন্সটির সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন বশেমুরবিপ্রবির পরিবেশ বিজ্ঞান ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী বিদিশা ইসলাম এবং তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারহানা ইসলাম দৃষ্টি । বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষকদের মধ্যে থেকে বক্তব্য রাখেন লোক প্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় সহকারী শিক্ষক ও চেয়ারম্যান বিতান খানম, প্রভাষক ইমা সুলতানা (চারু) এবং প্রভাষক প্রণীতা দত্ত । সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ফাতেমা-তুজ-জিনিয়া তার সাহসিকতার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
উল্লেখ্য গত ২৮ শে সেপ্টেম্বর, টেডএক্সউইম্যান এর ইভেন্ট আয়োজনের লাইসেন্স পান বশেমুরবিপ্রবির জৈবপ্রযুক্তি এবং জিন প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ হাসানুর রহমান (হাসান)। এছাড়াও, কনফারেন্সটি সফল করতে বশেমুরবিপ্রবির জৈবপ্রযুক্তি এবং জিন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সারোয়ার জাহান (কো-অর্গানাইজার), তমা দত্ত ( চিফ কমিউনিকেশন অ্যান্ড পিআর অফিসার), তানজিম ইশরাক (চিফ ক্রিয়েটিভ অফিসার), লোক প্রশাসন বিভাগের আসাদ-উজ-জামান (চিফ ব্রান্ডিং অফিসার), প্রাণরসায়ন ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের কাজী এহসান আহমেদ (চিফ মিডিয়া অফিসার), অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের মাসুম বিল্লাহ বিশ্বাস ( চিফ প্রোডাকশন অফিসার) এবং ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয় এর নাফিসা আহমেদ ( চিফ অপারেশন অফিসার) প্রমুখ বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। কনফারেন্সটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন বশেমুরবিপ্রবির জৈবপ্রযুক্তি এবং জিন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী তানজীর আহামেদ।
সাম্প্রতিক গবেষণা এবং নতুন আইডিয়ার উন্মোচন ও সেটা স্থানীয় কমিউনিটির মানুষের মাঝে শেয়ার করার উদ্দ্যশ্যেই এই টেডএক্স ইভেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হয়। বশেমুরবিপ্রবি এর মতো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে টেডএক্স ইভেন্টগুলো অনুষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীরা একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক একটা প্লাটফর্ম এ যুক্ত হচ্ছে তেমন অন্যদিকে স্থানীয় কমিউনিটির নতুন আইডিয়ার উন্মোচন এবং ভাগ করে নেওয়া, জনসংযোগ এবং জীবনের পাঠ, সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা এবং বন্ধুত্ব, বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন, পেশাদার সম্মেলন প্রোগ্রাম এবং পরিবেশ সম্পর্কে ধারণা, বড় প্রত্যাশা এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ দৃষ্টি সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন হবে সর্বোপরি বৃহত শ্রোতা এবং ক্যাম্পাস জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে শিক্ষার্থীরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :