গোপালগঞ্জ এর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিফ লায়লা নামে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে এক ছাত্রলীগ কর্মী।
আলিফ লায়লা মাগুরা সদর উপজেলার বাসিন্দা।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষা বর্ষে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।রবিবার (১১ অক্টোবর) রাত একটার দিকে মেসেঞ্জারে তিনি ধর্ষণের হুমকি পান।
বর্তমানে সারাদেশে অব্যাহত ধর্ষণের প্রতিবাদে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্ট করেন।তার কিছু পোস্টে ছাত্রলীগের নাম ছিলো।এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাগুরা ছাত্রলীগের হাসান আল মামুন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মী মেসেঞ্জারে তাকে ও তার মা এবং দুই বোনকে ধর্ষণের হুমকি দেয়।
ধর্ষণের হুমকির স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে গেলে তা এখন নেটিজেনদের মাঝে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
মুঠোফোনে আলিফ লায়লা সাংবাদিককে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন আমাকে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়।হুমকিদাতা মামুন মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তার লোক বলে দাবি করেন।মামুন আরও বলেন,আমাদের যে গ্যাং আছে তাতে তোর মতো মেয়েকে ধর্ষণ করতে সময় লাগবে না।তোদেরকে আমরা সবাই মিলে গ্যাং রেপ করবো।মামুন আমার পরিবারের সব খোঁজ খবর নিয়েছেন।এছাড়াও বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগের কর্মী জাহাঙ্গীর আরম ভাইয়ের এর নাম উল্লেখ করে বলেন,দেখিস তোদের জাহাঙ্গীর আছে কি হয়।
মাগুরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন মুক্তা ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেছে।তার ভাবমূর্ততি ক্ষুন্ন করার চক্রান্ত বলে দাবি করেন।এ বিষয়ে তিনি থানায় জিডি করেছেন এবং হুমকিদাতাকে খুজে বের করার চেষ্টা করছোন।এছাড়াও তিনি বলেন,আলিফ লায়লা যেহেতু আমার জেলার মেয়ে।আমি তার সাথে কথা বলেছি এবং তার নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি।তাকে ভয় পেতে নিষেধ করেছি।
ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম এ বিষয়ে বিব্রত হয়ে বলেন, এই ঘটনাটা যেই ঘটিয়েছে, সে খুব খারাপ করেছে।যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে, তাতে আমি একজন শিক্ষার্থী হিসেবেই লজ্জিত।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাকে চেনে,জানে।আমি এই ঘটনায় বিব্রত ও হতাশ।
তিনি দাবি করেন,ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করে এই ঘটনা সাজানো হয়ে থাকতে।যেভাবে গালি ও ধর্ষণের হুমকি দেয়া হয়েছে, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে কেউ এধরনের মেসেজ করে থাকতে পারে।এধরনের ঘটনা অতীতেও আমরা দেখেছি বিএনপি -জামায়াতের কর্মীরা সোস্যাল মিডিয়ায় ছাত্রলীগ সেজে বিতর্কিত কথা বলে ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে। যা পরবর্তীতে প্রমাণ হয়েছে। তাই এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত করে এর বিচার করুক।প্রয়োজনে ছাত্রলীগ সাহায্য করবে।
আলিফ লায়লা পাল্টা জবাবে বলেন,ছাত্রলীগই আমাকে হুমকি দিয়েছে।কারণ জামাত-বিএনপির কেউ হুমকি দিবে না।
এ বিষয়ে আলিফ লায়লা ডিসি অফিসে গেলে ডিসি কোনো ডায়রি না নিয়ে বলেন কোনো সমস্যা হবে না।সমস্যা হলে আমাকে বলো।এছাড়াও কোনো সাহায্যের আশ্বাস না দিয়ে আলিফ লায়লাকে মুঠোফোনে বলেন,শুধু পোস্ট দিয়ে কোনো লাভ নেই।এখান থেকে দুরে থাকায় ভালো।যখন তোমার হাতে সুযোগ আসবে তখন তুমি এর সংশোধন করতে পারবা।এখন এসব থেকে দুরে থাকো।শেষে তিনি তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার উদাহরণ দেন।
হুমকি আসার পরে ডিসি পক্ষ থেকে সাহায্যর আশ্বাস না পেয়ে বর্তমানে আলিফ লায়লার পরিবার ভীতির মধ্যে রয়েছে।আলিফ লায়লা বেশি চিন্তিত তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে ধর্ষণের হুমকি দেওয়াতে।আলিফ লায়লার বাবা সম্প্রতি বিজিবি থেকে অবসর নিয়েছেন।
ধর্ষণের হুমকিপ্রাপ্ত আলিফ লায়লা ধর্ষণ থেকে বাঁচতে ও তার পরিবারকে বাঁচাতে প্রশাসন সহ সকলের সাহায্য কামনা করেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :