লিখেছেনঃ তারিক লিটু
লাইব্রেরী চত্বরে তখনও সন্ধ্যা নামেনি,জ্বলন্ত সিগারেট হাতে অনেকক্ষণ ধরে বটতলায় একা বসে আছে সূর্য। সচারাচার সিগারেট খায় না সূর্য,অনেক দিন বাদে বাদে সিগারেট খায় যখন প্রিয়তির সাথে সূর্যের মান অভিমানেরপালাটা অনেক দীর্য হয়। সূর্য ভাবতে থাকে জীবনটা কত সুন্দর ছিল,কত সুন্দর চলছিল তার আর প্রিয়তির প্রেমের সংসার।যখন খুব মন খারাপ হয় ক্যাম্পাসে এ জায়গায় এসে বসে থাকে সূর্য। আজকেও খুব মন খারাপ,অন্ধকার ধেয়ে আসছে তার দিকে।আজ প্রিয়তির জীবনে অন্য মানুষের আগমন। কি করে এমন করতে পারল প্রিয়তি। আপনমনে সিগারেট টানছে আর বিড়বিড় করে কথা বলছে সূর্য। এমন সময় ফারিয়া কাছে এসে বসে,তার কথায় বাস্তবে ফেরে সূর্য। ভাই আপনাকে সারা ক্যাম্পাসে তন্ন তন্ন খুজছি,কল রিসেভ করছেন না,কেন? সিগারেটে একটান দিয়ে বললাম..কেন? মনে হয় এতক্ষণ সিগারেট খাওয়া ফারিয়া লক্ষ করিনি। সিগারেট খাচ্ছেন কেন,ফেলুন। দামি সিগারেট ফেলা যাবে না। হোক দামি ফেলে দিন,আমি…আমি একদম সিগারেটের ধোয়া পছন্দ করিনা। ভাই আপনি একটা ভিরু,কাপুরুষ… ফারিয়ার দিকে হা করে চেয়ে আছি,রাগও হচ্ছে কাপুরুষ বলায়। খুব শান্ত ভাবে বললাম,কেন? যে মেয়ে আপনাকে ভালবাসে না তার জন্য সিগারেট খাচ্ছেন আর যে আপনাকে ভালবাসে তাকে কষ্ট দিচ্ছেন,ফারিয়া কথাগুলো একনিঃশ্বাসে শেষ করে সূর্যের মুখের দিকে করুনভাবে চাইল। শুন ফারিয়া আমি কারোর জীবনে বীরপুরুষ হতে চাইনে তাই আমি কাপুরুষ। চুপ করে আছি,ফারিয়া কথা বলেই যাচ্ছে সেদিকে বিন্দুমাত্র খেয়াল নেই । অনেকক্ষণ পরে ফারিয়ার মুখের দিকে চাইতেই চমকিয়ে ওঠলাম,ফারিয়া কাঁদছে। কাঁদছ কেন ফারিয়া? আমার কান্নায় কিছু যায় আসে কি? কি উত্তর দিব বুঝতে পারছি নে,চুপ করে আছি! চুপ করে আছেন কেন,কথা বলেন? ফারিয়া… কি? ভালবাসা অনেক দামি,সবাই ভালবাসতে পারে না।আজকালকার ভালবাসায় প্রেম আছে ভালবাসা নেই। কথায় কথায় ব্লাকআপ, আমি..পারব না কাওকে ভালবাসতে। সবাই কে ভালবাসতে কে বলছে!আপনার পাশে যে বসে আছে তাকে ভালবাসুন। …না ফারিয়া কঠিন দৃষ্টিতে সূর্যের দিকে চেয়ে আছে,রাগে ফুফাচ্ছে মেয়েটা।কোন কথা না বলে সূর্যের অ্যাসাইনমেন্টেরর কপিটা তার সামনে ফেলে দিয়ে হন হন করে ফজিলাতুন্নেতা মুজিব হলের দিকে চলে যেতে লাগল। পেছন থেকে একবার ডাকল, ফারিয়া… ফারিয়া একবার সূর্যের দিকে ফিরে বলল আপনার প্রেম নিয়ে আপনি থাকেন। ফারিয়ার চলে যায়া দেখছি,মেয়েটা সত্যিই অদ্ভত।আমার জন্য রাত জেগে প্রায় অ্যাসাইনমেন্ট করে দেয়,আরো অনেক কিছু সেগুলো না হয় অপ্রকাশিত থাক। বুকের বাম পাশে কেমন একটাটান অনুভব করলাম ফারিয়ার জন্য। না ফারিয়া চলে যেতে পারে না,একদৌড়ে তার কাছে গেলাম। ফারিয়া..আমার কথা শুন আজ থেকে আপনার কোন কথা শুনবোনা। ফারিয়া কিছু কথা থাক না অপ্রকাশিত।শুধু আমাদের মনই জানুক না সে কথা। হঠাৎ থমকে দাড়িয়ে পিছন ফিরল ফারিয়া। অনেকক্ষণ ধরে সূর্যের চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করল। সূর্য হাত বাড়িয়ে দিল ফারিয়ার দিকে। ফারিয়া দৌড়ে এসে সূর্য কে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলল আমি থাকতে তোমাকে কখনও সিগারেট খেতে দিব না.
আপনার মতামত লিখুন :